মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

হাইমচরের আলগী বাজারে জমে উঠেছে কুরবানির পশুর হাট

হাইমচর প্রতিনিধি :

হাইমচর উপজেলা সদর আলগী বাজারে জমে উঠেছে প্রথম দিনের পশুর হাট। দামে কম হওয়ায় বাজারে ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ করা গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি গরুই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম, হতাশায় বিক্রেতারা।

আর মাত্র ৩ দিন পরেই ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ঈদকে সামনে রেখে হাইমচরে জমে উঠতে শুরু করেছে পশুর হাট। তবে করোনাভাইরাস আর বন্যায় দাম ও ক্রেতা সমাগম কম হওয়ায় বেচাকেনাও কম। আর এই অবস্থায় যেন মাথায় হাত পড়েছে বিক্রেতাদের।

হাইমচর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে হাইমচর উপজেলায় ১১টি পশুর হাট বসেছে। হাটগুলো হচ্ছে আলগী বাজার, জনতা বাজার, হাইমচর বাজার, হাওলাদার বাজার, গাজীর বাজার, রায়ের বাজার, চরভৈরবী বাজার, সাহেবগঞ্জ বাজার, কাটাখালী বাজার, ও বাংলা বাজার। এসব হাটে উপজেলা প্রশাশন নিয়মিত তদারকি করছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (০৫ জুলাই) বিকেলে হাইমচর উপজেলার আলগী বাজারে গরুর হাট ও চরভৈরবী বাজার গরুর হাট ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা তাদের লালন-পালন করা গরু ও ছাগল হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন। তুলনামূলক হারে বিদেশি গরুর থেকে দেশি গরুর কদর বেশি। এছাড়াও এ হাটে বিদেশি গরু তেমন একটা চেখেও পড়েনি।

এসব হাটগুলো ঘুরে ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার করোনা আর আকস্মিক বন্যায় তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই বলেন, বর্তমানে বিক্রেতারা গরুর দাম একটু বেশি চাচ্ছে। এছাড়া আগেই গরু কিনে রাখা এবং লালন পালন করা অনেকেই ঝামেলা মনে করছেন। ফলে ঈদের দুই থেকে তিন দিন আগে গরু কিনতে আগ্রহী অনেকেই। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই গরুর দাম গত বছরের তুলনায় এবার কম বলে মন্তব্য করেন।

চরভাঙ্গা থেকে গরু বিক্রি করতে আসা আবদুল গাজী বলেন, তিনটি গরু আনছি বিক্রি করতে। সকাল থেকে এখন ৫টা বাজে। কাস্টমারেরা যে দাম কয় তাতে তো মাথায় হাত পড়ে যাওয়ার অবস্থা। বাজারে দাম কম থাকায় এখনো গরু বিক্রি করতে পারিনি। দেখি সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারি কিনা।

কোরবানির পশু ক্রয় করতে আসা ক্রেতা জাহিদ হোসেন বলেন, যেহেতু সময় আছে সেহেতু এখনই তারা কোরবানির জন্য গরু ক্রয় করছেন না। হাতে ৩/৪ দিন সময় আছে। তাই ভাবছি কোরবানির আগেরদিন বা তার পূর্বে গরু কিনবো। তিনি আরও বলেন, এবার হাত টানা, তাই কমের মধ্যই একটি গরু কিনবো।

চরভৈরবী বাজারে জলিল সরদার বলেন, গরু কিনতে আসছি। পুরা হাটটি ঘুরে দেখলাম। গেল বছরগুলোর তুলনায় প্রতিটি গরুই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম মনে হচ্ছে।

অন্যদিকে হঠাৎ নদী ভাঙ্গন আর করোনার কারণে ঈদের আনন্দ নেই উপজেলার চরাঞ্চলে। হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলের ৩টি ইউনিয়নের সকল বাড়ি-ঘর ভাঙ্গন আতঙ্কে সেখানকার লোকজন তাদের পালিত গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে কম দামেই বিভিন্ন বাজারে গরু-ছাগল বিক্রি করে দিচ্ছেন।

আলগী বাজার পশু হাটের ইজারাদার ও হাটের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এস এম সাজ্জাদ হোসেন রনি বলেন, আমাদের হাট সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হচ্ছে। করোনার কারণে পশুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। তবে বাজারে প্রচুর গরু উঠেছে, ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুজন কান্তি শর্মা বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ কর্তৃক উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারের জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। কোরবানির জন্য কেনা গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ কোনো রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন তারা। যদি আক্রান্ত কোনো পশু পাওয়া যায় তাহলে আমরা সেগুলোকে হাট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাজার থেকে সরিয়ে দিচ্ছি। একই সাথে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com